04Jul

বাংলাদেশে জাতীয় হৃদরোগ হাসপাতালে প্রথম বারের মতো বুক না কেটে হার্টে ট্রান্স ক্যাথেটার এওর্টিক ভালভ রিপ্লেসমেন্ট (টিএভিআর) পদ্ধতিতে পুরনো অ্যাওটিক ভালভের ভেতর নতুন ভালভ প্রতিস্থাপন করা হয়েছে। গত ১৭ এপ্রিল হাসপাতালটির সহযোগী অধ্যাপক ডা. প্রদীপ কুমার কর্মকারের নেতৃত্বে একদল চিকিৎসক সফলভাবে কার্যক্রম সম্পন্ন করেন।

মঙ্গলবার (১৯ এপ্রিল) বিকেলে হৃদরোগ ইনস্টিটিউট হাসপাতালের চিকিৎসক প্রদীপ কুমার ঢাকা পোস্টকে এ তথ্য নিশ্চিত করেন।

তিনি বলেন, ৭৫ বছর বয়সী একজন সাবেক সচিব ২০১১ সালে হার্টের অ্যাওটিক ভালভ সরু হওয়ার কারণে বুক কেটে অ্যাওটিক ভালভ প্রতিস্থাপন করেন। পরবর্তীতে গত কয়েক মাস যাবত উনি হাঁটলে শ্বাসকষ্ট অনুভব করেন এবং সিঁড়ি উঠানামা করতে পারেন না। এই সমস্যা নিয়ে তিনি কার্ডিয়াক সার্জারি বিভাগের যে চিকিৎসকের কাছে অ্যাওটিক ভালভ প্রতিস্থাপন করেছিলেন, তার সঙ্গে যোগাযোগ করেন এবং পরীক্ষা-নিরীক্ষায় দেখা যায় উনার অ্যাওটিক ভালভ পুনরায় সরু হয়ে গেছে। আর সেই কারণেই তিনি হাঁটলে শ্বাসকষ্ট অনুভব করেন।

রোগীর স্বজনরা জানান, এ রোগের চিকিৎসা হিসেবে পূর্বের চিকিৎসক আবারও তাকে বুক কেটে অ্যাওটিক ভালভ প্রতিস্থাপনের পরামর্শ দেন। কিন্তু রোগী আর দ্বিতীয়বারের মতো বুক কেটে অ্যাওটিক ভালভ প্রতিস্থাপন করতে রাজি নন। পরবর্তীতে তিনি দেশে এবং বিদেশে বুক না কেটে বিকল্প চিকিৎসা সন্ধান করতে থাকেন এবং প্রতিবেশীর পরামর্শে জাতীয় হৃদরোগ হাসপাতালে ডা. প্রদীপ কুমার কর্মকারের অধীনে ভর্তি হন। পরবর্তীতে চিকিৎসকের পরামর্শে হাসপাতালে টিএভিআর পদ্ধতিতে বুক না কেটে গত ১৭ এপ্রিল সফলভাবে অপারেশন সম্পন্ন করেন।

ডা. প্রদীপ কুমার বলেন, সাধারণত হার্টে বুক কেটে টিস্যু অ্যাওটিক প্রতিস্থাপন করলে ১০ থেকে ১৫ বছরের মধ্যেই এটি আবার তার কার্যকারিতা হারিয়ে ফেলে। এমনকি বেশিরভাগ রোগী পরবর্তীতে দ্বিতীয়বারের মতো বুক কেটে ভালভ প্রতিস্থাপনের জন্য রাজি হন না। আর যারা সামর্থ্যবান তারা দেশের বাইরে অনেক টাকা খরচ করে টিএভিআর পদ্ধতিতে বুক না কেটে এই অপারেশন করে আসেন।

জাতীয় হৃদরোগ হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, ডা. প্রদীপ কুমার কর্মকার টিএভিআর পদ্ধতিতে বুক না কেটে দীর্ঘদিন যাবত সফলতার সঙ্গে তুলনামূলক কম খরচে এই অপারেশন করে যাচ্ছেন। তিনি বাংলাদেশের এই অপারেশনের পথিকৃৎ এবং সর্বোচ্চ সংখ্যক রোগীর টিএভিআর সাফল্যজনকভাবে অপারেশন করেছেন।

বুক না কেটে, বুকের হাড় না কেটে এই পদ্ধতিতে অ্যাওটিক ভালভ প্রতিস্থাপনে এক ঘণ্টার মতো সময় লাগে। এই সময় রোগীকে অজ্ঞান করতে হয় না। এমনকি, রোগী তিন দিন পরেই হাসপাতাল থেকে বাসায় চলে যেতে পারে এবং সাত দিনের মধ্যে কাজে যোগ দিতে পারে। এই সুবিধার কারণে সারাবিশ্বে টিএভিআর পদ্ধতিতে বুক না কেটে অ্যাওটিক ভালভ প্রতিস্থাপন শুরু হয়েছে এবং জনপ্রিয়তা পাচ্ছেI

Tags:

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This field is required.

This field is required.